নয় বছরের সম্পর্ক ভেঙ্গে সে তার বাবা মায়ের পছন্দের মেয়েটিকে সেদিন বিয়ে করে নিয়েছিল অনায়াসে।

0

 নয় বছরের সম্পর্ক ভেঙ্গে সে তার বাবা মায়ের পছন্দের মেয়েটিকে সেদিন বিয়ে করে নিয়েছিল অনায়াসে।



কবুল বলার ২০ মিনিট আগে আমাকে কিছু মেসেজ পাঠিয়েছিল।

মেসেজ গুলির বেশির ভাগই ছিল এই রকম 

যে আমাকে মাফ করে দিও।


আমি সেদিন বুঝতে পারছিলাম না,  তাকে কিভাবে মাফ করবো।

মাফ করতে কি আদো পারবো!

তবু মেসেজের উত্তর দিয়েছিলাম।

লিখেছিলাম

ক্ষমা করে দিলাম তোমার নতুন জীবন সুন্দর হোক।


মন থেকে বলেছিলাম কিনা জানিনা।

তবে তার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে এটা কেনো যেনো বিশ্বাস হচ্ছিল না।

মনে হচ্ছিল হয়তো মজা করছে, হয়তো আমাকে টেস্ট করছে।

কিন্তু না সে সত্যিই বিয়ে করে নিয়েছিল।


দুই পরিবারের কেউই আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিচ্ছিল না।

ভেবেছিলাম পড়াশুনাটা শেষ করে যেভাবেই হোক বাবা মা কে রাজী করাবো।

দুজন দুজনার কাছে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়েছিলাম,  যতো কিছুই হোক না কেন,  কেউ কাউকে ছাড়বো না।

ভালোবাসাটা কে জিতিয়ে দিবো।

ভুলে গিয়েছিলাম ভাগ্য বলতেও একটা জিনিস আছে।

আমার পরিবার আমাকে পড়াশুনার জন্য সময় দিলেও তার পরিবার তার জন্য একের পর এক মেয়ে দেখেই যাচ্ছিল।

সে যতই তার পরিবারকে আমার কথা বলতো তার পরিবার ততই দ্বিমত করতো।

একদিন সে বলেছিল

চলো পালিয়ে বিয়ে করি,

একদিন সবাই মেনে নিবে।

তখন ঐ মুহূর্তে বাবার কথা বাবার মান সম্মানের কথা ভেবে তাকে ফিরিয়ে দেই।

দেখতে দেখতে কখন ৯ বছর পার করে ফেলেছি টেরই পাইনি।

কখন যেনো সে আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

তাকে ছাড়াও যে জীবনে চলতে হবে সেটা কখনোই ভাবিনি।

তার পাশে অন্য কাউকে টুকটুকে লাল শাড়িতে কাউকে দেখবো আশা করিনি।

আমার ভাগ্যে যে নেই তা মানতে পারছিলাম না।

এক সাথে দেখা হাজার হাজার স্বপ্ন গুলি যে সব মিথ্যা হয়ে যাবে তা মানতেও কষ্ট হচ্ছিল।

মনে হচ্ছিল দুনিয়াটা হয়তো থেমে গেছে।

অনেক দূর যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু মাঝ পথে এভাবে হাত ছেড়ে দিবে তা আশা করিনি।


আচ্ছা কবুল বলার সময় কি তার একবারের জন্যেও আমার কথা মনে পরেনি।

একবার ও কি বুকটা কেপে উঠেনি।

একবার ও কি চিন্তা করেছে আমি তাকে ছাড়া কিভাবে এগিয়ে যাবো।

পরিবারের চাপে মেয়েদেএ ধরে বেধে বিয়ে দেয়া নিয়ে অনেক গল্প শুনেছি, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে যে এর উল্টো হবে ভাবিনি।

সে পরিবারের দোহাই দিয়ে সেদিন আমাকে ছেড়ে গিয়েছিল।

দোষ দিয়েছিল আমায়

বলেছিল

পালাতে চেয়েছিলাম

পালালে না কেনো! 


তাকে বলতে পারিনি, তার চাইতেও অনেক গুন বেশি ভালো বাবা কে বাসি।

মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েদের অনেক কিছুই ভেবে আগাতে হয়।

আমি পারিনি পরিবারের বিরুদ্ধে যেতে।

হুম কষ্ট হচ্ছিল।

মনে হচ্ছিল মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম।

সে যখন বাসর ঘরে নতুন বউতে মত্ত ছিল আমি তখন হতাশায় ডুবে কেদে রাত পার করছিলাম।


স্বামী স্ত্রীর  সম্পর্ক হলো আল্লাহ প্রদত্ত হালাল সম্পর্ক,  যার মধ্যে মায়া ভালোবাসা আল্লাহ নিজেই দিয়ে দেন।

আমাকে ভুলে যাওয়া খুবই  স্বাভাবিক ছিল।

কিন্তু আমার পাশে ঐ মুহূর্তে আল্লাহ ছাড়া কেউ ছিলেন না।

আমি একা ছিলাম।

কষ্ট পেয়েছিলাম

তার বিরহে প্রথম দিনটিতে যখন সকালে উঠে দেখলাম ফোনে তার কোন মেসেজ নাই।

বার বার মনে হচ্ছিল আমার দাবী করা মানুষটি এখন অন্য একজনের স্বামী। 

৯ বছর অনেক লম্বা সময়।

হাজার কথা হাজারো স্মৃতি জমা হয়েছিল।

চাইলেও একদিনে মুছে ফেলা সম্ভব হতো না।

কিন্তু ভেতরে ভেতরে দুমরে মুচরে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।

উঠে দাঁড়ানোর মত সাহস শক্তি কোনটাই পাচ্ছিলাম না।

হারাম সম্পর্কের অল্প দিনের আনন্দের শাস্তি দুনিয়াতেই পেতে শুরু করলাম।

হারে হারে টের পেলাম কতো বোকা ছিলাম। 

দোয়া করতাম কোনো মেয়েই যেনো এমন দিন পার না করে।

নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করতে লাগলাম।

পরিবারের কথাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলাম বলেই হয়তো উঠে দাড়াতে পেরেছিলাম।


পরিবারের দোহাই দিয়ে যে মাঝ পথে ছেড়ে যায় সে আর যাই হোক

সত্যি ভালো যে বাসতো না তা ততোদিনে বুঝে গিয়েছিলাম।

মেনে নিয়ে ছিলাম আল্লাহ উত্তম কিছু পরিকল্পনা করে রেখেছেন।

হয়তো সে আমার জন্য মঙ্গলকর ছিল না।

অনেক সময় লেগেছে একজন প্রতারক কে ভুলে যেতে।

মানুষ বড়ই অদ্ভুত প্রাণী 

যে তাদেরকে কষ্ট দেয় তাদেরকেই বেশি করে মনে রাখে।

নিজেকে নিজেই সান্তনা দিতাম।

কারণ পাশে কেউ ছিল না।

একাই কষ্টের দিন গুলি পার করছিলাম।

নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হতে লাগলাম।

কারণ তাকে হারিয়ে আমি পস্তাতে চাইনা

সে পস্তাবে যে আমাকে হারিয়েছে।

ওয়াদা ভঙ্গ কারীর শাস্তি কি আমি জানিনা।

দুনিয়ায় তো তারা ভালই থাকে।

তবে আল্লাহ একজন আছেন তিনিই বিচার করবেন।

তার জন্য একটাই দোয়া করতাম সে যেনো ভালো থাকে।


আল্লাহ যেনো তাকে ক্ষমা করে দেন।

মনের কোণা থেকে চাইলেও ঝেড়ে ফেলতে পারছিলাম না।

অন্যদিকে সে দিব্বি ভালো আছে।

এক বিন্দু অনুশোচনা তার মধ্যে আমি দেখিনি।

হয়তো তার কাছে মনে হয়েছে সে উত্তম সিদ্ধান্ত টাই সময় মত নিতে পেরেছে।


নিজেকে আজ গড়ে তুলেছি।

প্রতিষ্ঠিত করেছি।

অনেক পথ একাই পাড়ি দিয়েছি।

পরিবারের বিরুদ্ধে যাইনি বলেই হয়তো পেরেছি।

ভালোবাসা কুরবানি দিয়েছি।

কিন্তু পরিবার ছাড়িনি।

একটা কথা হারে হারে বুঝেছি পৃথিবীতে এক মাত্র বাবা মা ই তাদের সন্তানদের কোনো প্রকার স্বার্থ ছাড়াই ভালোবাসেন।

সেও তার পরিবারকেই প্রাধান্য দিয়েছিল।

অভিমান হয়েছিল চাইলেই দুই পরিবারকে এক করার জন্য দুজন মিলে শেষ চেষ্টা টা করতে পারতাম, কিন্তু সে হাল ছেড়ে দিয়েছিল।

তার ভালোবাসাটা সেদিন চূড়ান্ত ভাবে হেরে গিয়েছিল।

অনূভুতি গুলি বাস্তবতার ভীরে চাপা পড়ে গিয়েছিল।


আজ আর অভিমান নেই।

যা হয়েছে ভালোর জন্যই হয়েছে।

কিন্তু আজও শত সাফল্যের মধ্যেও মনের কোণে তার জন্য এক চিমটি ভালোবাসা রয়েই গেছে।

কারন আমার অনূভুতি গুলি মিথ্যা ছিল না।

খুব জানতে ইচ্ছে করে সেও কি আমাকে মনে করে, নাকি সেদিনের মতই আজও সে অনুভুতি শূন্য। 

ভালো থাকুক সকল ভালোবাসায় ভরা যুগল গুলো।

#Love_Story #Sad_Love_Story #BrekUp_Love 

#collected 


#সিনথিয়া_অরয়া


#lipi_sarker

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

ronymampi26@gmail.com

ronymampi26@gmail.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top